তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত ও গুরুত্ব-2022
ইসলাম ধর্ম সবচাইতে বড় ধর্ম আর আমরা যে মুসলিম সেটা আমাদের গর্ব। আজকে আমার এই পোস্ট থেকে যে বিষয়গুলো জানতে পারবেন তা হচ্ছে "তাহাজ্জত নামাজের ফজিলত ও গুরুত্ব" "তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত "তাহাজ্জত নামাজ কোন সূরা পড়তে হয়"এবং আরো জানাবো "তাহাজ্জুদ নামাজ কত রাকাত"।
অন্য পোস্ট:ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নতুন নিয়ম ২০২২।
তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত ও গুরুত্ব |
মোটকথা তাহাজ্জুদ নামাজের সকল ফজিলত এবং আমল সম্পর্কে আজকে জানাবো কিভাবে আপনি তাহাজ্জত নামাজ পড়বেন, কয় রাকাত নামায পড়বেন, কোন সূরায় নামায পড়বেন, কোন সময় নামাজ পড়বেন, এসব সকল তাহাজ্জুত নামাজের বিষয় নিয়েই আজকের আমার এই পোস্ট।
তাহাজ্জুদ নামাজ কি?
তাহাজ্জুদ শব্দটি আরবি ভাষা থেকে এসেছে।তাহাজ্জুদ নামাজ বলা হয়েছে গভীর রাতে ঘুম থেকে উঠে যে সালাত আদায় করা হয় তাকে তাহাজ্জাতুল নামাজ বলা হয়।
সহি হাদিসের সবকটি কিতাবেই বর্ণিত আছে যে, আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু হতে বর্ণিত, আল্লাহতালা প্রতিটা রাতের শেষাংশে দুনিয়ার আকাশে বিরাজমান থাকে এবং তিনি খোঁজ করেন এবং বলেন কেউ প্রার্থনাকারী আছো কি? আমি যার প্রার্থনা কবুল করব ।কেউ অভাবগ্রস্ত আছো কি? যার অভাব আমি দূর করে দিব। কেউ বিপদগ্রস্ত আছো কি? যার বিপদ আমি দূর করে দিব। এভাবে তিনি শেষ আসমানে এসে ডাকতে থাকে। এবং যেই মুমিন এবং মুসলমান তাহাজ্জুত নামাজের অবস্থায় পার্থনা করে আল্লাহ তায়ালা নিজেই দোয়াগুলো কথা শুনে তাকে মাফ করে দেন।এবং তার নেক ইচ্ছা গুলো পুরন করে দেন।
তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত ও গুরুত্ব
তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত এবং গুরুত্ব লিখে অথবা বলে কখনোই শেষ করা যাবে না, কারণ আমাদের রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই এই নামাজকে সবচাইতে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন এটি নফল ইবাদত হলেও নফলের মধ্যে সবচাইতে উত্তম ইবাদত বলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন।
তিনি আরো বলেন যে, যারা বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে তাদের মধ্যে একটি বড় অংশের দল থাকবে যারা তাহাজ্জত নিয়মিত আদায় করতেন।
তিনি নিজেও এই তাহাজ্জত নামাজ নিয়মিত পড়বেন এবং তার সাহাবীগণদের কে তাগিদ দিতেন ,কারণ কোরআনের বিভিন্ন জায়গায় এই তাহাজ্জত নামাজের বিষয়ে তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
সূরা আল ফুরকানের 64 নং আয়াতে বলা হয়েছে: "আল্লাহর প্রিয় বান্দা তারা যারা তাদের পালনকর্তার সামনে সিজদা করে এবং দাঁড়িয়ে রাত কাটায়।" "তারা অগ্নিপরীক্ষায় অটল, অবিচল, সত্যবাদী, বিশ্বস্ত। তারা তাদের সম্পদ আল্লাহর উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেছিল এবং রাতের শেষ প্রহরে তারা আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছিল।" ফরজ নামাজের পর অন্য সব সুন্নাত ও নফল নামাজের মধ্যে তাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি।
এজন্য সকল মুমিন মুসলমানদের উচিত তারা সারা দিন শেষে রাতের বেলা আল্লাহর দরবারে এই তাহাজ্জত নামাজ আদায় করা এবং এই নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে তার গুনাহ মাফের জন্য দোয়া চাওয়া এবং তার নেক আমলের জন্য দোয়া প্রার্থনা করা। এবং সংসার জীবনে যাতে সুখময় হতে পারে সে বিষয়ে নিয়ে আল্লাহর কাছে সরাসরি কথা বলে দোয়া চেয়ে নেওয়া। কারণ আল্লাহ তাআলা এই প্রতি রাতেই শেষ আসমানে আসে।
পরিশেষে বলা যেতে পারে তাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্ব এবং ফজিলত সবচাইতে নফল ইবাদতের মধ্যে উত্তম।
তাহাজ্জুদ নামাজ সুন্নত নাকি নফল
তাহাজ্জুতের নামাজ সুন্নত এই অর্থে যে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম যে কাজগুলি করেছেন সেটি আমরা সুন্নত বলে থাকি কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এই তাহাজ্জত নামাজ নিয়মিত করতেন এই অর্থে আমরা এই তাহাজ্জত নামাজের সুন্নত বলতে পারি।
তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত
তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি না, আবার অনেকেই জানি যারা জানে তাদের প্রয়োজন নেই। আর যারা জানিনা আমি দেখি যে গুগলের প্রতিদিন প্রায় 10 হাজারেরও বেশি মানুষ তাহাজ্জত নামাজের নিয়ত সম্পর্কে গুগলের সার্চ করে থাকে।
Bangla: উচ্চারণঃ নাওয়াইতু আন উশাল্লিয়াল্লাহি তাআলা রাকায়াতাই ছালাতিত তাহাজ্জুদি মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শরিফতি আল্লাহু আকবার। অর্থঃ আমি তাহাজ্জুদের দুই রাকাত নিয়ত করছি। অতঃপর ‘আল্লাহু আকবার’ বলার নিয়তে সালাত আদায় করুন।
তাহাজ্জুতের নামাজ কত রাকাত
তাহাজ্জুতের নামাজ মোট 12 রাকাত নামাজ ও অন্যান্য নামাজের মত দুই রাকাত দুই রাকাত করে পড়তে হয়।
তাহাজ্বতের নামাজ কোন সূরা পড়তে হয়
তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করার জন্য নির্দিষ্ট কোন সূরার কথা আলোচনা নেই। তবে সূরা ফাতেহার সঙ্গে অন্যান্য নামাজের মতই অন্য যেকোনো একটি সূরা মিলিয়ে সালাত আদায় করলেই হবে।
অন্য পোস্ট:গুগল এডসেন্স অ্যাপ্রুভ না পাওয়ার কারণ-2022
তাহাজ্জুদ এর নামাজ পড়ার নিয়ম
তাহাজ্জুদ সালাত আদায় করার নিয়ম অন্যান্য সালাতের মতোই প্রথমে আপনি নিয়ত করবেন তারপর ছানা পাঠ করবেন, তারপরে সূরা ফাতিহার সঙ্গে যেকোনো একটি সূরা মিলিয়ে অন্য সব সালাতের ন্যায় এই সালাত ও আদায় করুন।
এভাবেই দ্বিতীয় রাকাত আদায় করে তাশাহহুদ, দরূদ ও দোয়া মাছুরা পড়ে সালাম ফেরানোর মাধ্যমে নামাজ সম্পন্ন করা।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কখনোই এই সালাত দুই রাকাত, কখনো চার রাকাত, কখনো আট রাকাত, আবার কখনো বারো রাকাত, আদায় করে থাকে তবে আট রাকাত আদায় করার উত্তম।
এছারা আপনি যদি বেতের নামাজ এশার নামাজ এর পর আদায় করে থাকেন, তাহলে তাহাজ্জুদ এর পর আর আদায় করতে হবেন।
তাহাজ্জুদ নামাজ কখন পড়তে হয়
এশার সালাতের পর সুবহে সাদিকের আগ পর্যন্ত মুহূর্তে যে কোন সময় সালাত আদায় করা যায়।
তবে এই সালাত একদম মধ্যরাতে আদায় করাই উত্তম, কারণ আল্লাহ তাআলা শেষ আসমানে মধ্যরাতে এসেই বান্দাদেরকে ডাকতে থাকেন।
0 টি মন্তব্য
দয়া করে নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন